সোমবার, ১৬ই জুন ২০২৫, ১লা আষাঢ় ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • খুলনার সাবেক ওসি কারাগারে
  • নেপাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • ভালোবাসি বাবা
  • ১৪ হাজার ৫২৬ কোটি টাকার সম্পদ রেখে গেছেন সঞ্জয় কাপুর
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান
  • স্বর্ণ চুরি করে আশপাশে বিক্রির চেষ্টা, ২০ ভরিসহ ‘চোর’ আটক
  • ভারসাম্যহীন বৃদ্ধের ব্যাগে মিলল সাড়ে ৩ লাখ টাকা
  • এলএনজি সংকটের আশঙ্কায় বাংলাদেশ, দুশ্চিন্তায় শিল্পখাত
  • ইউনূস-তারেক বৈঠকে সন্তুষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ
  • ইরানের হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে ১০

এলএনজি সংকটের আশঙ্কায় বাংলাদেশ, দুশ্চিন্তায় শিল্পখাত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৫ জুন ২০২৫, ১৩:৪৬

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের জেরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বাড়ছে উত্তেজনা। এর প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ইরান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও জ্বালানি তেল সরবরাহে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যপথ হিসেবে বিবেচিত হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দিয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা, আর বাংলাদেশও রেহাই পাবে না এই ধাক্কা থেকে।

বাংলাদেশের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির প্রধান উৎস কাতার ও ওমান। এই দুই দেশ থেকে আমদানির সিংহভাগ এলএনজিই হরমুজ প্রণালি হয়ে আসে। ফলে এই রুট বন্ধ হলে বাংলাদেশের গ্যাস সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কাতারের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর এবং ওমানের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি রয়েছে পেট্রোবাংলার।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে কাতার থেকে ৪০টি এলএনজি কার্গো আসার কথা, যার মধ্যে এপ্রিল পর্যন্ত ৩৪টি কার্গো ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। তবে হরমুজ প্রণালির সম্ভাব্য সংকট ভবিষ্যতের সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এখনো পর্যন্ত সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি। কাতারের সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয়ের জন্যই সমস্যা সমান। তবে পরিস্থিতি যদি খারাপ দিকে যায়, তখন বিকল্প চিন্তা করতে হতে পারে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি হুমকিতে পড়বে। ওই রুট বিপজ্জনক হলে স্বাভাবিকভাবেই জাহাজ পরিচালকরা যাবেন না। আর গেলেও বীমা খরচ এত বেশি হবে যে, এলএনজির দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে।

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। একদিনের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দাম ১২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৭৮.৫ ডলারে পৌঁছেছে। চলমান উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হলে তেলের দাম ১০০ থেকে ১৩০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশে গ্যাসের বড় অংশ ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প খাতে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প এলএনজিনির্ভর হয়ে পড়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম বাড়লে, বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যয়ও অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এতে একদিকে পণ্যের দাম বাড়বে, অন্যদিকে বিদেশি ক্রেতারাও অর্ডার কমিয়ে দিতে পারেন—যা অর্থনীতির জন্য বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, কাতার, সৌদি আরব, আমিরাতসহ পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর জ্বালানি রপ্তানির প্রধান পথ হরমুজ প্রণালি। শুধু এলএনজি নয়, প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলও যায় এই রুটে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো—যেমন ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশ—এই রুটের ওপর নির্ভরশীল।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর