রবিবার, ৬ই অক্টোবর ২০২৪, ২১শে আশ্বিন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি: সিপিডি
  • অভিন্ন জলরাশি নীতিমালা না হলে বন্যাঝুঁকি আরও বাড়বে: রিজওয়ানা
  • ব্যাংক নোটে নতুন নকশা, বাদ যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর ছবি
  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে: আসিফ নজরুল
  • বৈরী আবহাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
  • শহীদ পরিবারের পক্ষে আজ মামলা করবে নাগরিক কমিটি
  • ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত
  • সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা কামালসহ গ্রেপ্তার ৪

বাইডেনের প্রস্তাব মানলে ইসরায়েলে সরকার ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি দুই মন্ত্রীর

ডেস্ক রির্পোট

প্রকাশিত:
২ জুন ২০২৪, ১২:০৭

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-জিভিয়ার শুক্রবার (৩১ মে) বলেছেন, হামাস ধ্বংস হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি তারা মানবেন না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাতে রাজি হলে দেশটির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ এবং জোট সরকার ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-জিভিয়ার শুক্রবার (৩১ মে) বলেছেন, হামাস ধ্বংস হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি তারা মানবেন না।

তবে বিরোধী দলীয় নেতা জাইর লাপিদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওই যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মতি দিলে তিনি সরকারকে সমর্থন দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজেই জোর দিয়ে বলে আসছেন, হামাসের সামরিক এবং প্রশাসনিক সক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া এবং সব জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে স্থায়ী কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না।

বিবিসি লিখেছে,প্রেসিডেন্ট বাইডেন তিন ধাপের যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে, যে সময়টায় গাজার জনবহুল এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) প্রত্যাহার করা হবে।

এই চুক্তির চূড়ান্ত লক্ষ্য হল, হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলের সমস্ত জিম্মির মুক্তি, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় বড় ধরনের পুনর্গঠন।

কিন্তু তাতে আপত্তি জানিয়ে স্মোট্রিচ শনিবার (১ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হামাসের ধ্বংস এবং সব জিম্মির মুক্তির আগে ওই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে যুদ্ধ থেকে সরে এলে সেই সরকারের সঙ্গে তিনি থাকবেন না।

একই মনোভাব প্রকাশ করে বেন-জিভিয়ার বলেছেন, "ওই চুক্তির মানে হল যুদ্ধের অবসান। এবং হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য থেকে সরে আসা।

এটি একটি অপরিনামদর্শী চুক্তি, যা সন্ত্রাসবাদের বিজয় ঘটাবে এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করবে।

ওই প্রস্তাবে রাজি হলে সরকারের পতন ঘটানোর অঙ্গীকার করেছেন বেন-জিভিয়ার।

নেতানিয়াহুর ডানপন্থি জোট কয়েকটি ছোট দলের ওপর নির্ভর করে পার্লামেন্টে কোনো রকমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা টিকিয়ে রেখেছে। এর মধ্যে বেন- জিভিয়ার ওজমা ইহুদিত (ইহুদি শক্তি) পার্টির ছয়টি আসন এবং স্মোট্রিচের রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির সাতটি আসন আসন রয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়া প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন ইসরায়েলের অন্যতম প্রভাবশালী বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদ জায়ির লাপিদ, যার ইয়েশ আতিদ দলের ঝুলিতে রয়েছে ২৪টি আসন।

তিনি বলেছেন, বেন-জিভিয়ার ও স্মোট্রিচ সরকার ছেড়ে গেলেও জিম্মি মুক্তির চুক্তি করার জন্য ইয়েশ আতিদ দলের সমর্থন পাবেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েল সরকারে যখন এই জটিলতা চলছে, শনিবার (১ জুন) হাজারো মানুষ তখন বাইডেনের পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার দাবিতে রাজধানী তেল আবিবে বিক্ষোভ করেন। নেতানিয়াহুর পদত্যাগও দাবি করেন তারা।

এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয় এবং কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।

এদিকে মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা শনিবার (১ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে বাইডেনের প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়টি 'চূড়ান্ত' করতে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ওই পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা মেনে নিলে তার সরকার গাজাকে আরও বেশি সহায়তা দিতে পারে।

হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি ওই চুক্তি মেনে নেয়, তাহলে তারাও নেবেন।

কিন্তু নেতানিয়াহুর দপ্তর শনিবার (১ জুন) এক বিবৃতিতে বলেছে, যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের শর্তে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা ধ্বংস করা, সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং গাজা যাতে ইসরায়েলের জন্য আর ‘হুমকি’ হতে না পারে, তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে সেখানে।

নেতানিয়াহুর দপ্তর বলছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আগে ইসরায়েল 'এসব শর্ত পূরণের ওপর জোর দেওয়া অব্যাহত রাখবে'।

অন্যদিকে, শনিবারও রাফায় লড়াই অব্যাহত রয়েছে। মিশর সীমান্তে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরে গাজা সিটিতেও গোলা বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫২ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল যে অভিযান শুরু করেছে, তাতে গাজা একপ্রকার নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর