সোমবার, ৭ই অক্টোবর ২০২৪, ২২শে আশ্বিন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সেপ্টেম্বরে সড়কে প্রাণ গেল ৪২৬ জনের
  • পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি: সিপিডি
  • অভিন্ন জলরাশি নীতিমালা না হলে বন্যাঝুঁকি আরও বাড়বে: রিজওয়ানা
  • ব্যাংক নোটে নতুন নকশা, বাদ যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর ছবি
  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে: আসিফ নজরুল
  • বৈরী আবহাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
  • শহীদ পরিবারের পক্ষে আজ মামলা করবে নাগরিক কমিটি
  • ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

পুড়ল বস্তি কারখানা বাজার

ডেস্ক রির্পোট

প্রকাশিত:
২৫ মার্চ ২০২৪, ১৪:২৯

রাজধানীর মহাখালীর গোডাউন বস্তিতে রোববার ভয়াবহ আগুন লেগেছে। এতে পুড়ে গেছে শতাধিক পরিবারের থাকার ঠিকানা। তবে বড় ধরনের হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদীতে টি.কে. গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে আগুন নেভাতে গিয়ে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় ৮ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়া শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাউছিয়া কাঁচাবাজারে আগুনে শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। যুগান্তর প্রতিবেদন ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

 

গোডাউন বস্তিতে ২৪ মার্চ  রোববার বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার পরপরই তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ৪টা ২৯ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে শুরু হয় স্বস্তির বৃষ্টি। এতে কমতে থাকে আগুনের তেজ। ৫টা ৩৩ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ডিউটি অফিসার লিমা খানম যুগান্তরকে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রথমে ৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে আরও দুটি ইউনিট যোগ দেয়। প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়নি। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুষলধারে বৃষ্টিতে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। বৃষ্টির সময়টি কাজে লাগিয়ে ফায়ার সার্ভিসও জোর তৎপরতা চালায়। তবে এরই মধ্যে ছাই হয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর সেখানে শুধুই টিন আর পোড়া ইট দেখা গেছে। রমজানে ইফতারের আগে সব পুড়ে যাওয়া নিঃস্ব পরিবারগুলোর মধ্যে ছিল হাহাকার। অনেকেই কেবল এক কাপড়ে কোনোমতে জীবন বাঁচিয়েছেন। মূল্যবান কোনো কিছুই নিয়ে ঘর থেকে বের করতে পারেননি। চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তীলে তীলে গোছানো সংসার।

গজারিয়ায় কারখানায় আগুন : প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টার দিকে টি.কে. গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানায় পাটের গোডাউনে আগুন দেখতে পান কর্মরত শ্রমিকরা। সেখান থেকে আগুন নদীতে নোঙর করে রাখা একটি পাটখড়ি বোঝাই ট্রলারে লেগে যায়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে কাজ শুরু করে। তবে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে পার্টিকেল বোর্ড, পাটখড়ি, প্লাস্টিকের দরজা ও পাইপের মতো দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে সরু রাস্তা আর পানির অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের।

ঢাকা বিভাগ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন বলেন, দুপুর ১টা ১২ মিনিটে আমরা অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই। প্রথমে আমাদের গজারিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে। পরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আরো দশটি ইউনিট যোগ দেয়। বিকাল ৪টার দিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিশেষ ফোম টেন্ডার এবং রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট নিয়ে আসি আমরা। এরপর রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, কারখানাটিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এ ব্যাপারে আমরা একাধিকবার তাদের সতর্ক করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।

রূপগঞ্জে গাউছিয়া কাঁচাবাজারে পুড়ল শতাধিক দোকান : শনিবার রাত পৌনে ৩টায় গোলাকান্দাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা গাউছিয়া কাঁচাবাজারে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে শতাধিক দোকানসহ মুদি মনোহারি মালামাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ছাই হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, গাউছিয়া কাঁচাবাজারে মুদি মনোহরি, সবজি, বিভিন্ন যানবাহনের পার্টস, কনফেকশনারি পণ্য, মাংস, দই-মিষ্টি, ফলসহ নানা ধরনের মালামাল বিক্রি হয়। রাতে বিকট শব্দে বজ পাত ও ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, বাজারে আমার মালিকানাধীন ভাই ভাই মোটরস ও টিপু শিকদারের ভূইয়া মোটরসে গাড়ির পার্টস জাতীয় প্রায় ১২ কোটি টাকার মালামাল ছিল। সব পুড়ে গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মালামাল তোলা হয়েছিল। এখন আমাদের পথে বসা ছাড়া আর উপায় নেই।

শুঁটকি ব্যবসায়ী ঝন্টু দাস বলেন, নানা ধরনের শুঁটকি বিক্রি করে আমার সংসার চলে। আগুনে সব শুঁটকি ছাই হয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।

ফায়ার সার্ভিসের ইন্সিডেন্ট কমান্ডার ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক ছালেহ উদ্দিন বলেন, তদন্ত করে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর