বৃহঃস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৪, ২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • বাংলাদেশে নয় ভারতেই শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো উচিত
  • পলাতক ৭০০ বন্দি এখনও অধরা
  • ইসি সচিবালয়ের সচিব শফিউল আজিমকে ওএসডি
  • পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে স্বাধীন কমিশন গঠন
  • আবারও পুলিশে বড় রদবদল
  • সচিবালয়ে কর্মচারীদের মহাসমাবেশ স্থগিত
  • কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
  • ঢাকার বাতাস আজ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’
  • দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াবে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন সেই তাপসী তাবাসসুম

বাবা মানে হাজার বিকেল আমার ছেলে বেলা...ভাইরাল গানটির মূল কারিগরকে চিনে নিন

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৩, ১৮:১৩

বাবাকে নিয়ে গানটির গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী তাসনীম সাদিয়া

অনলাইন জগতে প্রায়ই একটি গান শোনা যায়, ‘বাবা মানে হাজার বিকেল, আমার ছেলেবেলা/ বাবা মানে রোজ সকালে পুতুল পুতুল খেলা।’ এই গানের মূল কারিগর রংপুরের মেয়ে তাসনীম সাদিয়া। তিনি গানটি লিখেছেন, সুর করেছেন এবং কণ্ঠও দিয়েছেন। তবে তিনি রয়ে গেছেন আড়ালে।

 

তাসনীমের গান কাভার করে তারকা বনে গেছেন শিশুশিল্পী জায়মা নূর। তার গাওয়া বাবা নিয়ে গানটি ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকেই এক বছরে গানটি ভিউ হয়েছে প্রায় ৯ কোটির বেশি। গানের ভিডিওতে ক্রেডিট না দেওয়ায় কষ্ট পেয়েছেন তাসনীম। তিনি বলেন, গানটির ভিডিও এবং কাভার করার জন্য তাঁর অনুমতি কেউ নেয়নি। এমনকি তাঁর ক্রেডিট পর্যন্ত দেয়নি। এতে তিনি ভীষণ ব্যথিত হয়েছেন।

 

 

 

সাম্প্রতিক সময়ের তুমুল এই জনপ্রিয় গানের আড়ালে থাকা কারিগর তাসনীম সাদিয়াকে নিয়েই আজকের গল্প। ছোটবেলা থেকে রংপুর বেতারে গান গাইতেন তাসনীম। একাডেমিক পড়ালেখার অধ্যায় শেষ করে ঢাকায় পরিচিত এক গীতিকবির কাছে মৌলিক গান চাইলেন। সেই গীতিকবি অগ্রিম টাকা চেয়ে বসলেন। সবে পড়ালেখা শেষ করেছেন, এই মুহূর্তে টাকা পাবেন কোথায়? তাই মনের দুঃখে বনে না গিয়ে ঘরে বসে গান লেখার চেষ্টা শুরু করলেন তিনি।

 

অতঃপর নিজের লেখা গানে কণ্ঠ দিলেন তাসনীম সাদিয়া। ‘বন্ধু তোকে বলছি’ শিরোনামে ২০১৫ সালে গানটি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়। খুব একটা সাড়া মেলেনি। তবে দমে যাননি। পরে মাকে নিয়ে নিজের লেখা গানে কণ্ঠ দিলেন। এই গান ইউটিউবে প্রকাশিত হলো ২০১৯ সালে। মোটামুটি সাড়া পেয়ে অনুপ্রাণিত হলেন। গানে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গান লেখার ঝোঁক আরও বেড়ে গেল তাঁর। এবার এই তরুণী বাবার সঙ্গে শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি ও অভিমান-অনুরাগ নিয়ে চার-পাঁচ দিনের চেষ্টায় লিখলেন নতুন গান। গাইলেনও তিনি।

 

 

যে বাবাকে ঘিরে গানটির জন্ম হলো, সেই বাবার নাম হুমায়ুন রেজা স্বপন। তিনি লালমনিরহাট দায়রা জজ-আদালতের আইনজীবী।

বাবার সঙ্গে শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি এবং অভিমান-অনুরাগ নিয়ে গানটি লেখেন তাসনীম

২০১৯ সালেই জি-সিরিজের ব্যানারে গানটি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়। গানের কথা ও গায়কি ঢং মানুষের ভালো লেগে গেল। পেলেন বিপুল সাড়া। তবে তাঁর চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছে শিশুশিল্পী জায়মা নূর। সে একটি অনুষ্ঠানে গানটি কাভার করেছিল। সেই গানের ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হয়।

 

যে বাবাকে ঘিরে গানটির জন্ম হলো, সেই বাবার নাম হুমায়ুন রেজা স্বপন। তিনি লালমনিরহাট দায়রা জজ-আদালতের আইনজীবী। মেয়ে তাসনীমের সৃষ্ট বহুশ্রুত গানের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে হুমায়ুন রেজা বলেন, যেকোনো বাবার জন্য এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মেয়েটা নিজের চেষ্টায় গান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করছেন, সংগীতে তাঁর মেয়ে আরও ভালো কিছু করবেন, আরও অনেক দূরে এগিয়ে যাবে।

 

তাসনীম সাদিয়া ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রংপুর কারমাইকেল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। সেখান থেকেই অনার্স এবং পরে ঢাকার লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেন। তাঁর বাবার বাড়ি রংপুর নগরের সেনপাড়ায়। বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় প্রকৌশলী স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত তিনি। বাবার বাড়ির মতো স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তাঁর সংগীতচর্চায় পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

 

গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন আমজাদ হোসেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁর সংগীত আয়োজনে বেশ কিছু জনপ্রিয় গান আছে। তবে সংগীত অঙ্গনে তাঁর ২৩ বছরের ক্যারিয়ারে এটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য গান। গানটি অনেক বছর মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। জুন মাসের তৃতীয় রোববার (১৯ জুন) বাবা দিবস।

 

দিবসটি উপলক্ষে দুই বছর ধরে অনেকেই গানটি ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে বাবার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছেন। তাসনীম সাদিয়া বলেন, ‘অনেকে গানটি ইসলামিক গজল বলে চালানোর চেষ্টা করেন। আসলে এটা কোনো ইসলামিক গজল বা সংগীত নয়। স্রেফ এটা আমার বাবাকে নিয়ে লেখা স্মৃতিচারণামূলক গান।’

 

বিভিন্ন সময়ে লেখা তাসনীমের ভান্ডারে বেশ কিছু গান জমা আছে। সেসব গান পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেবেন। পাশাপাশি ভালো গান লেখা ও সংগীতচর্চার মাধ্যমে মানুষের মনে বেঁচে থাকাই তাঁর জীবনের চাওয়া।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর